লাইফস্টাইল-Lifestyle লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
লাইফস্টাইল-Lifestyle লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০১৪

তরুণদের বিয়ে ভীতি

তরুণদের বিয়ে ভীতি

পুরুষের বিয়ে ভীতি। শুনতে নিশ্চয়ই অবাক করার মত কথা। হঁযা, আজকাল তরুণদের একটা বড় অংশের বিয়ে ভীতি রয়েছে। আর এই বিয়ে ভীতির কারণ অর্থ-বিত্তের অভাব, বেকারত্ব, শারীরিক অসুস্থতা, পাত্রী অপছন্দ, নতুন জীবনে পদার্পণ বা দাম্পত্য আতংক এসব কিছুই নয়। বিয়ে ভীতিতে আক্রান্ত তরুণ-যুবকদের বৃহত্তর অংশ মনে করে তাদের জীবন শেষ হয়ে গেছে। তারুণ্য-যৌবনে শরীরের ওপর অত্যাচার-অবিচার, ক্ষেত্রবিশেষে মাদক সেবন এবং নারীর সংস্পর্শে এলে নিজের নিষ্ক্রীয়তার অভিজ্ঞতা, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যৌনজীবন নিয়ে ভুল ধারণা এবং মানসিক সমস্যা এবং কিছু কিছু মেয়েদের অতিরিক্ত জ্ঞান তরুণদের বিয়ে ভীতির প্রধান কারণ। অবশ্য কিছু কিছু ক্ষেত্রে শারীরিক সমস্যা নেই তা বলা যাবে না। তবে ডাক্তারদের চেম্বারে আসা বিয়ে ভীতিতে আক্রান্ত তরুণদের শতকরা ৮০ থেকে ৯০ ভাগেরই কোন শারীরিক সমস্যা নেই। গত ছয়মাসে আমার চেম্বারে আসা বিয়ে ভীতিতে আক্রান্ত শতাধিক তরুণ ও যুবকের ওপর পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায় শতকরা ৮০ ভাগের কোন ধরনের শারীরিক সমস্যা নেই।

শতকরা ৫ ভাগের প্রয়োজনীয় কিছু হরমোনের ঘাটতি রয়েছে যা চিকিৎসাযোগ্য, শতকরা ১০ ভাগের শরীরে প্রয়োজনীয় শুক্রাণুর অভাব রয়েছে (আলগেস পাকিস), শতকরা ২/৩ ভাগের শরীরে কোন শুক্রাণু নেই (অ্যাজোসপারসিযঅ)। এছাড়া শতকরা যে ২০ ভাগের কিছু কিছু শারীরিক সমস্যা রয়েছে তাদের মধ্যে শতকরা অন্ততঃ ৫ ভাগের যৌন সমস্যা (ইম্পোর্টেন্স) রয়েছে। এ তথ্য আন্তর্জাতিক গবেষণা তথ্যের সঙ্গে সঙ্গাতিপূর্ণ। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে আমাদের দেশের তরুণরা অধিক সুঠাম ও সক্ষম। তবুও তরুণদের বিয়ে ভীতি কেন। এসব তরুণদের কাছে চেম্বারে আমি পাঁচটি প্রশ্ন করে থাকি। কেমন করে তারা বুঝতে পেয়েছে তারা ফুরিয়ে গেছে বা শারীরিক যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে।

 তাদের এই ধারণার পিছনে কোন বাস্তব অভিজ্ঞতা রয়েছে কি? শারীরিক শক্তি ফিরিয়ে কোন ওষুধ সেবন করেছে কি, ইত্যাদি ইত্যাদি। তরুণ-যুবকদের বিচিত্র সব জবাব, অভিজ্ঞতা, এসব তুলে ধরার কোন ইচ্ছা আমার নেই। এছাড়া রোগীর গোপন তথ্য প্রকাশ মেডিক্যাল এথিকস অবমাননার পর্যায়ে পড়ে। তাই এসব নিয়ে দীর্ঘ বর্ণনার কোন ইচ্ছে নেই। তবে এ কথাটি সত্য, তরুণদের বিয়ে ভীতির কারণের পিছনে যেমন অজ্ঞতা, মানসিক সমস্যা এবং তরুণদের একটি বড় অংশের বাস্তব অভিজ্ঞতা নেতিবাচক হওয়ায় (যার শতকরা ৯৯ ভাগ বিয়ের পর ঠিক হয়ে যায়) বিভ্রান্তি বাড়ছে। পাশাপাশি একশ্রেণীর তথাকথিত যৌন সমস্যা চিকিৎসক নামধারীদের অজ্ঞতা এবং ভুল চিকিৎসার কারণে তরুণদের যৌন ভীতি বেড়ে যাচ্ছে। বিয়ে করেনি এমনসব তরুণদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেক্স স্টিমুল্যান্ট ট্যাবলেট দেয়া হয়। ফলে এসব তরুণরা মনে করে তাদের নিশ্চয়ই যৌন সমস্যা রয়েছে। এতে তরুণদের সাময়িক শারীরিক ফিটনেস বাড়লেও দীর্ঘমেয়াদি মানসিক সমস্যার সৃষ্টি করে। এমনকি একাধিক তরুণ অকপটে শিকার করেছেন ডাক্তারের দেয়া যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট সেবন করে অপকর্মে লিপ্ত হয়েছেন। এসব বিয়ে ভীতি বা যৌন ভীতিতে আক্রান্তদের বেশির ভাগের প্রায় একই মন্তব্য যতদিন ট্যাবলেট সেবন করেন ততদিন ভালো থাকেন। ওষুধ সেবন শেষ তো সবশেষ। অথচ এসব তরুণের শতকরা ৮০ থেকে ৯০ ভাগই শারীরিকভাবে সুস্থ এবং কেবলমাত্র যথাযথ কাউন্সিলিং করতে পারলে কোন প্রকার যৌন উত্তেজক ওষুধ ছাড়াই তরুণদের বিভ্রান্তি দূর করা সম্ভব।


এ প্রসঙ্গে আমি আগেও বলেছি শুধু বাংলাদেশের তরুণদেরই বিয়ে ভীতি এবং যৌন ভীতি বেশি। এ ক্ষেত্রে একটি উদাহরণ দেবো। আমি সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে চর্ম ও যৌন রোগের ওপর পোস্ট গ্রাজুয়েশন করার সময় সিঙ্গাপুর ডিএসসি ক্লিনিকে কিছুদিন অবজারভার হিসেবে প্রশিক্ষণ নেই। প্রচুর বাংলাদেশী তরুণ আসতো এ ক্লিনিকে। সিঙ্গাপুর ডিএসসি ক্লিনিক বাংলাদেশের যেকোন প্রাইভেট হাসপাতালের চেয়ে বড় কেবলমাত্র যৌন রোগীদের চিকিৎসা করা হয় এই ক্লিনিকে। আমি দেখেছি সিঙ্গাপুরে চাকরিরত বাংলাদেশী তরুণরাও নানা ভুল ধারণার কারণে নানা ধরনের যৌন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এসব তরুণের অনেকেরই যৌন জীবন নিয়েও রয়েছে নানা বিভ্রান্তি। কয়েকমাস আগে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক জেনারেল হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। হাসপাতালের অন্যতম চিকিৎসক ডাঃ শক্তির সঙ্গে আমার পূর্ব নির্ধারিত মিটিং ছিল। তিনি একাধিকবার আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। যা হোক, ডাঃ শক্তি যৌন সমস্যার রোগীদের চিকিৎসা করেন। বাংলাদেশ থেকে বেশকিছু রোগী যায় ব্যাংকক হাসপাতালে। ডাঃ শক্তি আমাকে প্রায় একই রকম তথ্য দিলেন। বাংলাদেশী রোগীদের শারীরিক বা যৌন সমস্যার চেয়ে মানসিক সমস্যাই বেশি।


থাক এসব কথা। তরুণদের বিয়ে ভীতি আসলে মোটেও শারীরিক সমস্যার কারণে হয় না। যৌবনে অধিকাংশ পুরুষই কিছু অনাকাঙ্খিত অভ্যাসের শিকার হয়। এর জন্য শরীরের যৌন শক্তি শেষ হয়ে যাবে এটা নিতান্তই ভুল ধারণা। শরীরে যৌন শক্তি নামে আলাদা কোন শক্তি নেই। শারীরিক সুস্থতা, সুঠাম দেহ, মানসিক প্রশান্তি থাকলে এবং পরস্পরের সুন্দর সম্পর্কও সমঝোতা থাকলে প্রাত্যহিক জীবনের অন্যসব কাজের মত দাম্পত্য জীবনও সুখের হতে পারে। তাই বিয়ে ভীতির কারণে তরুণদের যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট সেবন করা উচিত নয়। এছাড়া এজন্য অযথা ডাক্তারের চেম্বারে যাবারও কোন দরকার নেই। তবে বিয়ের পর যদি কোন শারীরিক সমস্যা থাকে এবং এ কারণে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের অবনতি হওয়ার আশংকা তৈরি হয় তখন যেকোন সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন। যদি ছোটখাটো শারীরিক সমস্যা থেকে থাকে তা আবশ্যই চিকিৎসায় ভালো হয়। অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসা-ওষুধ ছাড়াই কাউন্সিলিং তরুণদের বিয়ে ভীতি দূর এবং বিবাহ পরবর্তী জীবন সুন্দর হতে পারে।


লেখকঃ ডাঃ মোড়ল নজরুল ইসলাম
চুলপড়া, যৌন সমস্যা ও চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ
এবং লেজার এন্ড কসমেটিক্স সার্জন
চেম্বারঃ লেজার স্কিন সেন্টার
বাড়ী নং-২২/এ, রোড-২, ধানমন্ডি, ঢাকা।
বিয়ে ভেঙে যাওয়ার ৯ আলামত

বিয়ে ভেঙে যাওয়ার ৯ আলামত



কে না চায় সুখী দাম্পত্য! কিন্তু সবার জীবনে কি আর সেই সুখ মেলে! তুচ্ছ থেকে শুরু করে গুরুতর নানা বিষয় নিয়ে বিষিয়ে ওঠে অনেক দম্পতির জীবন। খুবই অপ্রত্যাশিতভাবে একের পর এক নানা ঘটনা ঘটতে থাকে, যার ফলাফল নিশ্চিত বিবাহ-বিচ্ছেদ। বিয়ে ভেঙে যাওয়ার আগে সাধারণত যে ধরনের আলামত দেখা দেয়, সম্প্রতি তা প্রকাশ করা হয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে। নয়টি আলামতের কথা রয়েছে সেখানে।

অতীত নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি
অতীত নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি শুরু হয়ে যায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে। কথার আঘাতে একে অন্যকে ঘায়েল করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তাঁরা। স্ত্রী তাঁর স্বামীর পরিবারের সদস্যদের একদমই সহ্য করতে পারেন না। ঠিক একই আচরণ লক্ষ করা যায় স্বামীর মধ্যেও।

তুচ্ছ কারণে ঝগড়া
ঝগড়া করার জন্য তুচ্ছ নানা কারণ খুঁজে বের করার প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে। সামান্য কোনো অভিযোগ পেলেই তুলকালাম কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলতে উদ্যত হন তাঁরা। একটা পর্যায়ে তাঁরা একে অন্যকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন। স্বামী কিংবা স্ত্রী ঘর থেকে বের হলে একদমই ঘরে ফিরতে ইচ্ছে করে না তাঁদের। এসব সমস্যার কোনো সমাধানও তাঁরা দেখতে পান না।

মতের অমিল
স্বামী-স্ত্রীর মতের অমিল প্রকট আকার ধারণ করে। যৌথভাবে কোনো সিদ্ধান্তই তাঁরা নিতে পারেন না। দুজনই যাঁর যাঁর অবস্থানকে সঠিক প্রমাণ করার জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েন। নিজের মতামত ঠিক কি না, তা ব্যাখ্যা করার জন্য কোনো যুক্তির আশ্রয় নেওয়ার প্রয়োজন তাঁরা অনুভব করেন না। মূলত ইগো সমস্যার কারণেই এমনটা হয়। একপক্ষ মনে করতে থাকে তাঁর আত্মমর্যাদায় আঘাত দেওয়ার চেষ্টা করছে অপর পক্ষ। একে অন্যকে স্বার্থপর বলেও ভাবতে শুরু করেন তাঁরা।

গোপন ঈর্ষা
মনের অজান্তেই চুপিসারে ঈর্ষা নামের বিষবাষ্প ঢুকে পড়ে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে। সঙ্গীর ওপর থেকে আস্থা পুরোপুরি উঠে যায়। একটা পর্যায়ে একে অন্যকে অবজ্ঞা করতে শুরু করেন তাঁরা।

আত্মকেন্দ্রিকতা
স্বামী-স্ত্রী নিজ নিজ স্বার্থের বাইরে আর কিছুই ভাবতে পারেন না। নিজেকে উপেক্ষিত ও অনাহূত বলে মনে করতে থাকেন তাঁরা। সংসারকে আর নিজের বলে মনে হয় না। একটা সময়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ‘আমাদের’ বলে আর কিছু থাকে না। আত্মকেন্দ্রিক হয়ে ওঠেন দুজনই। এটা খুবই ভয়ংকর একটি বিষয়।

প্রতারণা
বিয়ে ভেঙে যাওয়ার আগে অনেক ক্ষেত্রে স্বামী কিংবা স্ত্রীর কেউ একজন প্রতারণার আশ্রয় নেন। পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন তাঁদের কেউ কেউ।  নিশ্চিতভাবেই এটা বিয়ে এবং পরিবারকে ধ্বংস করে দেয়।

আকাঙ্ক্ষার মৃত্যু
স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই যৌন মিলনের আকাঙ্ক্ষা উবে যায়। আর যৌন সম্পর্ক স্থাপিত হলেও সেখানে কোনো রকম আবেগ কাজ করে না। যৌনতাকে পুরোপুরি যান্ত্রিক একটি প্রক্রিয়া বলে মনে হয় তাঁদের কাছে। অথচ দাম্পত্য জীবনকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে যৌন সম্পর্কের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

সমস্যা পুঞ্জীভূত করার চেষ্টা
সমস্যা সমাধানের কোনো ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার চেষ্টা করেন না স্বামী কিংবা স্ত্রী। তাঁরা হাল ছেড়ে দেন। একে অন্যের কাছ থেকে পালিয়ে বেড়ান তাঁরা। একটা পর্যায়ে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ না নিয়ে বরং সমস্যা পুঞ্জীভূত করার চেষ্টায় মেতে ওঠেন তাঁরা। পুঞ্জীভূত ক্ষোভ বিস্ফোরিত কবে হবে, সেই প্রতীক্ষায় দিন গুনতে থাকেন। সম্পর্কের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেওয়ার ইচ্ছে থেকেই তাঁরা এমনটা করেন।

যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া 
পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ করে দেন স্বামী ও স্ত্রী। যে দাম্পত্যে একটা সময়ে কথার ফুলঝুরি ঝরত, সেখানে ভর করে আশ্চর্য এক নীরবতা। তাঁরা কথা বলা বন্ধ করে দেন এবং একে অন্যের ছায়াও মাড়ান না। কোনো দম্পতির মধ্যে এমন আলামত দেখা যাওয়ার অর্থ হচ্ছে ফেরার আর কোনো পথ নেই। নিশ্চিত বিবাহ-বিচ্ছেদের পথে হাঁটছেন তাঁরা।

  একাধিক স্বামী

একাধিক স্বামী

                           

প্রশ্নঃ একজন পুরুষ যদি একাধিক স্ত্রী রাখার অনুমতি পায়, তাহলে ইসলাম একজন নারীকে কেন একাধিক স্বামী রাখতে নিষেধ করে?

জবাব

অসংখ্য মানুষ যার মধ্যে অনেক মুসলমানও রয়েছে, প্রশ্ন করেন-মুসলিম পুরুষ একাধিক স্ত্রী রাখার অনুমতি পাচ্ছে অথচ নারীর ক্ষেত্রে সে অধিকার অস্বীকার করা হচ্ছে, এর যৌক্তিকতা কি? অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে যে কথাটি প্রথমেই আমাকে বলে নিতে হবে, তা হলো ভারসাম্যপূর্ণ ন্যায় বিচার ও সমতার ভিত্তির ওপরেই একটি ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠিত। মানুষ হিসেবে আল্লাহ তা’আলা নারী ও পুরুষকে সমান মান দিয়েই সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু সাথে সাথে সামর্থ ও যোগ্যতার ভিন্নতা এবং সে অনুযায়ী দায়িত্ব কর্তব্যের বিভিন্নতা দিয়ে। শারিরীক ও মানসিক ভাবে নারী ও পুরুষ সম্পূর্ন ভিন্ন। জীবনের ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা এবং দায়িত্ব-কর্তব্যও বিভিন্ন। ইসলামে নারী ও পুরুষ সমান কিন্তু একই রকম নয়। সূরায়ে নিসার ২২ থেকে ২৪ আয়াতে একটি তালিকা দেয়া হয়েছে যে, মুসলিম পুরুষ কোন কোন নারীকে বিবাহ করতে পারবে না। এর পরে ২৪ আয়াতে আলাদা করে বলা হয়েছে সেই সব নারীও (নিষিদ্ধ) যারা অন্যের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ আছে- অর্থাৎ অন্যের বউ।
ইসলামে নারীর জন্য বহু-স্বামী গ্রহণ নিষিদ্ধ কেন, নিম্নোদ্ধৃত বিষয়গুলো তা পরিষ্কার করে দেবে।
ক. একজন পুরুষের একধিক স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও তার পরিবারে জন্মগ্রহণকারী শিশুদের মাতা-পিতার পরিচয় খুব সহজেই পাওয়া যায়। শিশুর পিতা কে আর মাতা কে। অপরদিকে একজন নারী যদি একাধিক স্বামী গ্রহণ করে তবে এ পরিবার জন্ম নেয়া শিশুর শুধু মায়ের পরিচয় পাওয়া যাবে-বাবার নয়। পিতা ও মাতার সুস্পষ্ট পরিচয়ের ক্ষেত্রে ইসলাম আপোসহীন। আধুনিক মনোবিজ্ঞানিরা বলেন, যে শিশু তার মাতা-পিতার পরিচয় জানে না, বিশেষ করে পিতার- সে শিশু তীব্র মানসিক জটিলতা ও হীনমন্যতায় ভোগে। এ শিশুদের শৈশব নিকৃষ্টতর এবং আনন্দহীন । দেহপসারিণী বা বেশ্যাদের সন্তানরা এর জলন্ত প্রমাণ। এদের শিশুকাল ও কৈশোর মর্মান্তিক। বহু স্বামী গ্রহণকারী পরিবারে জন্ম পাওয়া শিশুকে নিয়ে কোনো স্কুলে ভর্তী করতে গেলে যদি মাকে প্রশ্ন করা হয় শিশুর পিতার নাম? তা হলে সে মাকে দু’জন অথবা তার বেশি পুরুষের নাম বলতে হবে। বিজ্ঞানের অগ্রগতি এখন জেনেটিক পরীক্ষার মাধ্যমে মাতা ও পিতা উভয়কে সনাক্ত করার কৌশল আবিষ্কার করেছে। কাজেই যে বিষয়টা অতীতে অসম্ভব ছিল বর্তমানে তা খুব সহজেই হতে পারে।
খ. প্রকৃতি প্রদত্ত যোগ্যতা ও বৈশিষ্ট, বহুগামীতায় নারীর চাইতে পুরুষের বেশি।
গ.শারীরিক যোগ্যতায় একজন পুরুষের পক্ষে কয়েকজন স্ত্রীর স্বামীর দায়িত্ব ও ভূমিকা পালন সহজ। একজন নারী সেই একই অবস্থানে, অর্থাৎ যার কয়েকজন স্বামী আছে, তাদের স্ত্রী হিসেবে যে দায়িত্ব ও কর্তব্য তার ওপর বর্তায় তা পালন করা তার পক্ষে আদৌ সম্ভব নয়। কেননা মাসিক ঋতুচক্রের বিভিন্ন পর্যায়ে মানসিক ও আচরণগত বিভিন্ন পরিবর্তনের মধ্যে তাকে পড়তে হয়।
ঘ. একজন নারী যার একাধিক স্বামী থাকবে-তাকে তো একই সাথে কয়েকজনের যৌন-সঙ্গী হতে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সমূহ সম্ভাবনা থাকবে যৌন রোগের এবং যৌনতার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া অন্যান্য মারাত্মক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে পড়ার। উপরন্তু তার মাধ্যমেই সে সব রোগে তার স্বামীর আক্রান্ত হবে। এমনকি যদি তার স্বামীদের কারো অন্য কোনো নারীর সাথে বিবাহ বহির্র্ভূত যৌন সম্পর্ক নাও থাকে। পক্ষান্তরে একজন পুরুষ- যার একাধিক স্ত্রী রয়েছে, স্ত্রীদের কারো যদি বিবাহ বহির্ভূত অন্য কারো সাথে যৌন সম্পর্ক না থাকে তাহলে যৌনতা সংক্রান্ত কোনো রোগে আক্রান্ত হবার আদৌ কোনো সম্ভাবনা নেই।
উপরোল্লেখিত কারণগুলো এমন যা যে কারো পক্ষে চেনা এবং বুঝে নেয়া সম্ভব। এছাড়া হয়তো আরো অসংখ্য কারণ থাকতে পারে যে কারণে অন্তহীন জ্ঞানের আধার সৃষ্টিকর্তা বিধাতা প্রতিপালক আল্লাহ তা‘আলা নারীদের জন্য বহু স্বামী বরণ নিষিদ্ধ করেছেন।

শনিবার, ১২ জুলাই, ২০১৪

যেখানে ডাক্তার বা হাতের কাছে ঔষধ নেই!

যেখানে ডাক্তার বা হাতের কাছে ঔষধ নেই!


রোগ ব্যাধি ঘটনা দুর্ঘটনা  কখনও সখনও সবার জীবনে ঘটে। আপৎ কালিন প্রাথমিক প্রতিরোধমূলক বিধি ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করছি, ট্রাই করে দেখলেও দেখতে পারেন।

হঠাৎ করে পেটে ব্যথা

হঠাৎ করে পেটে ব্যথা অনুভব করলেন, পেট ফেঁপে রয়েছে । হাতের কাছে এন্টাসিড জাতিয় কোন ঔষধ নেই। তখন এক কাপ উষ্ণ পানির মধ্যে এক চা চামচ জিরার গুড়া ছেড়ে পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করে তারপর চামচ দিয়ে নেড়ে জিরার গুড়া সহ পানি সবটুকু পান করে নিন। দেখবেন কিছু ক্ষণের মধ্যে পেটের গ্যাস চলে গেছে, পেট ব্যথাও চলে যাবে।
তবে জিরার গুড়া না হলে চলবে আস্ত জিরাকেও ১০/১৫ মিনিট ভিজিয়ে নিয়ে শুধু পানিটুকু পান করলে চলবে তবে আস্ত জিরার পরিমাণ বাড়াতে হবে এক টেবিল চামচ হতে হবে।

২। কারো বেশি খাওয়া কিংবা গুরু পাক অথবা এমন কিছু খাওয়ার কারণে পেট খারাপ, মানে ঘন ঘন টয়লেট যাওয়া হচ্ছে। তারা এক কাপ উষ্ণ গরম পানিতে এক চা চামচ ডালচিনির গুড়া চামচ দিয়ে মিশিয়ে খেয়ে দেখুন কিছুক্ষণের মধ্যে টয়লেটে যাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে।

৩। ঘরে কারো কোন অঙ্গ হঠাৎ করে কেটে গেছে! দর দর করে রক্ত ঝরছে! এক কাজ করুন, হাতের কাছে চিনি থাকলে এক খাবলা চিনি নিয়ে ঐ কাঁটা স্থানে চেপে ধরেন পাঁচ মিনিট! ব্যস রক্তপড়া বন্ধ হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

৪। ঘরে কারো শরীরের কোন অংশ পুড়ে গেলে কি করবেন! দৌড়া দৌড়ী না করে থুথপেষ্ট দিয়ে ভাল করে আগুনে পুড়ে যাওয়া স্থানে প্রলেপ করে দেন। তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন।

৫। কেউ আচানক কোন সংবাদ পেলে, বা কারো মূর্ছা যাওয়া রোগ থাকে এখানে সেখানে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যায়। এই রূপ কোন রুগীর কাছে থাকলে যদি কারো কাছে বডি স্প্রে বা পারফিউম জাতিয় কিছু থাকে তাহলে ঐ রোগীর নাকের কাছে কিছু ক্ষণ স্প্রে করতে থাকেন তাহলে দেখবেন সে জ্ঞান ফিরে পাবে।

৬। মুখে বা জিহ্বায় অনেকের ঘা হয়, যাকে মাউথ আলসার বলে থাকেন। এর কোন  ঔষধ নাই। ভুক্তভোগীরা জানেন কেমন যন্ত্রণা! তবে একে পুরা নিরোধ করতে না পারলেও এর আক্রমণের প্রচণ্ডতা কমান যায়। যখন দেখবেন মুখে বা জিহ্বায় ঐ শত্রুটি জন্ম লাভ করতে যাচ্ছে। তখন আধপাকা কলা খেয়ে নিবেন তাহলে ঐ বেটা আর বাড়তে পারবেনা। আর পরিস্থিতি যদি আরও খারাপ থাকে মানে মাউথ আলসার পেকে যায় তাহলে ঘি কিংবা বাটার ঐ ক্ষত স্থানে লাগালে সাময়িক উপশম হবে। বিশেষ করে খাবার পূর্বে লাগিয়ে নিলে খাবার সময় ব্যথা অনুভূত হবেনা।

৭। শীতের দেশে কারো যদি জ্বর আসে প্রচণ্ড জ্বর কম্বলের ভিতরে গিয়ে ঠক ঠক করে কাঁপুনি আসে। আবার জ্বরে শরীর পুড়ে যাচ্ছে। তিনি লেবু, শসা টমেটো কে পাতলা চাক চাক করে স্লাইস করে ঐ স্লাইস গুলো একের পর এক (যেমন লেবুর পর শসা শসার পর টমেটো স্লাইস) কপাল থেকে শুরু করে মাথার চার পাশের বসিয়ে লম্বা রুমাল বা গজব্যান্ডিজ দিয়ে বেধে রাখুন। দেখবেন কিছু ক্ষণের মধ্যের জ্বরবাবাজি পালিয়ে যাবেন।

৮। যারা অফিস আদালতে বা ছায়ায় বসে বেশির ভাগ সময় অতিবাহিত করেন তারা যদি কখনও অতি রোদে পুড়ে যান তো মাথায় এক ধরণের প্রচণ্ড অস্থিরতা বোধ করেন। অনেকে ভাবেন যে প্রেশার বেড়ে গেছে! আসলে তা নয় । এই ধরণের অস্থিরতার সময় কোন ঔষধ না নিয়ে সারা মাথায় গোলাপজল মাখিয়ে নিন। দেখবেন কিছু ক্ষণের মধ্যে আপনার মাথা হালকা হয়ে যাবে।

৯। বাচ্চাদের অনেক সময় দাঁতে ব্যথা হয় । যাদের দাঁতে ক্যারেজের আক্রমণের গর্ত হয়ে গেছে, যাকে আমরা বলে থাকি পোকায় ধরেছে!  সেই ছিদ্রে মেয়েরা যে নেইল পলিস ব্যবহার করে তা থেকে এক ফোটা দিয়ে তোলা দিয়ে চেপে ধরে রাখতে বলুন । দেখবেন কিছু ক্ষণের জন্য ব্যথা কমে গেছে। তবে অবশ্যই দাঁতের রোগীকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবেন। নতুবা এই সামান্য দাঁতের ব্যথা থেকে ক্যান্সার হয়ে যেতে পারে।