বুধবার, ২ জুলাই, ২০১৪

ফুটবল ইতিহাসের স্মরণীয় সেরা দশটি ছবি




বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ফুটবল। আর এ খেলা ঘিরেই রয়েছে হাজার লক্ষ ঘটনা, নাটকীয়তা। এর মাঝে কিছু ঘটনা বা নাটকীয়তা ফুটবল ইতিহাসে চিরস্মরণীয় স্থান দখল করে নিয়েছে।  এর মাঝে থেকে সেরা দশটি ছবি নিয়েই আজকের এই ফটোফিচার। আসুন দেখে নেই ছবিগুলো, জেনে নেই এর ইতিহাস।

বিধাতার হাত:


এটি ১৯৮৬ বিশ্বকাপের সেই বিখ্যাত ‘হ্যাণ্ড অব গড’ গোলের ছবি। কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনা আর ইংল্যাণ্ডের মধ্যে খেলা চলছিল। দিয়াগো ম্যারাডোনার হাতের যাদুতে মুহূর্তেই সবাইকে বোকা বানিয়ে ঘটে যায় ঘটনাটা। আর্জেন্টিনা এগিয়ে যায় ২-১ ব্যবধানে। এই গোলটার জন্যই ফুটবল বিশ্বে চিরস্মরণীয় হয়ে গেছে ওই ম্যাচটি।

অন্তরের আলিঙ্গন:


ফুটবল ইতিহাসের অপর এক শক্তিশালী ছবি এটি। হাত নেই আর্জেন্টিনার এই সমর্থকের। তবু সে আনন্দ ভাগ করে নিতে, প্রিয় খেলোয়াড়দের জড়িয়ে ধরতে এগিয়ে গেছে। ১৯৭৮ সালে দেশের মাটিতেই বিশ্বকাপ ফাইনালে নেদারল্যাণ্ডকে ৩-১ গোলে পরাজিত করে আর্জেন্টিনা। জয় করে নেয় বিশ্বকাপ। আনন্দের আতিশায্যে সমর্থক ভুলে গেছেন তার সীমাবদ্ধতা। ছুটে গেছেন প্রিয় খেলোয়াড়দের কাছে।
গাজার অশ্রু


তাঁর নাম পল গ্যাসকোয়নে। বয়স ২৩। ১৯৯০-এ ইতালি কাঁপানো এই ইংলিশ খেলোয়াড় একই বছর নিজ দেশের বিশ্বকাপ দলে স্থান করে নেন। নিজের খেলা দিয়ে জয়ও করে নেন সবার মন। কিন্তু সেমি-ফাইনালে একটা হলুদ কার্ডই বাধ্য করে তাঁকে অশ্রুতে ভাসতে। কারণ তার যে ফাউলের কারণে এই হলুদ কার্ড, ঠিক সেই ফাউলের কারণেই প্রতিপক্ষ জার্মানি পেয়ে গেছে এক পেনাল্টির সুযোগ। ইতিহাসে এই দৃশ্য ‘গাজার অশ্রু’ হিসেবে বিখ্যাত হয়ে আছে।

জারজিনহো’র পেলেকে উত্তলন:


ছবিটি ১৯৭০ বিশ্বকাপ ফাইনালের। প্রথম গোলটা করার পরই সতীর্থ জারজিনহো আনন্দে পেলেকে কোলে তুলে নেন। সে বিশ্বকাপে ব্রাজিল ইতালিকে ফাইনালে ৪-১ গোলে পরাজিত করে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ জয় করে নেয়। সেই সাথে নিজেদের করে নেয় জুলে রিমে কাপ।

জিদানের মাথা দিয়ে আঘাত:


প্রতিটা খেলোয়াড়ের স্বপ্ন থাকে ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটা অত্যন্ত ভালোভাবে শেষ করার। ফ্রান্স তথা বিশ্বের কিংবদন্তী খেলোয়াড় জিনেদিন জিদানের সুযোগ ছিল দলকে নিজ দেশের মাটিতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জয়ের। কিন্তু দলের হয়ে একটা গোল করার পরই কী থেকে কী যেন হয়ে গেল জিদানের। মাথা দিয়ে ঢুঁশ দিয়ে বসলেন ইতালির মার্কো মাতারেজ্জিকে। অভিযোগ ওঠে, মাতারেজ্জি জিদানের বোনকে উদ্দেশ্য করে অরূচীকর মন্তব্য ছুড়ে দেওয়াতেই কিংবদন্তী এই খেলোয়াড়ের এমন আচরণের কারণ। ফলাফল- প্যানাল্টি পেয়ে যায় ২০০৬ বিশ্বকাপ নিজ ঘরে নিয়ে যায় ইতালি। এই ছবিটি ফুটবল ইতিহাসের পঞ্চম শক্তিশালী ছবি হিসেবে স্থান করে নিয়েছে।

ইংল্যাণ্ডের বিশ্বকাপ জয়:


ছবিটি ইংল্যাণ্ডের বিশ্বকাপ জয়ের মুহূর্তের। ১৯৬৬ বিশ্বকাপে জার্মানিকে ৪-২ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপ জিতে নেয় ইংল্যাণ্ড। ইংলিশ ফুটবলভক্তরা এই ছবিটিই বুকে ধারণ করে আবারো জয়োল্লাশে ফেটে পড়তে অধীর অপেক্ষায় আছেন আজো।

মিলানে জাহান্নাম:


চ্যাম্পিয়ানস লীগে এসি মিলান এবং ইন্টার মিলানের মধ্যকার কোয়ার্টার ফাইনালের খেলা চলছিল। এসি মিলান তখন ৩-০ তে এগিয়ে। হঠাৎ মাঠে শুরু হয়ে গেল ফ্লেয়ার বৃষ্টি। বন্ধ হয়ে যায় খেলা। ছবিতে দেখা যাচ্ছে দুই প্রতিপক্ষের দুই খেলোয়াড় মার্কো মাতারেজ্জি এবং ম্যানুয়াল রুই কোস্তা একসাথে দাঁড়িয়ে আবার খেলা শুরুর অপেক্ষায় আছে। ছবিটি ভাতৃত্বের প্রতীকরূপে ফুটবল ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

জন টেরির পিছলে যাওয়া:


২০০৮ এর চ্যাম্পিয়ানস লীগ ট্রফিটা হতে পারতো চেলসির। কিন্তু একটুখানি পিছলে যাওয়াই রুখে দিল সব, পুড়িয়ে দিল স্বপ্ন। প্যানাল্টি কিক করতে গিয়ে চেলসি অধিনায়ক জন টেরি বৃষ্টিস্নাত মস্কোর পিচে গেলেন পিছলে। বলটা প্রয়োজনের চেয়ে বেশি উচ্চতা দিয়ে চলে যায়। মিস হয়ে যায় গোল। সাথে সাথে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন টেরি।

মাঠেই মৃত্যু:


ছবিটি ২০০৩ কনফেডারেশন কাপের ছবি। খেলা চলা অবস্থায় হঠাৎই হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায় ওয়েস্ট হ্যাম খেলোয়াড় ফো’র। দ্রুত মেডিকেল টিম ছুটে যায়। কিন্তু ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গেছে। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন ফো।

ড্যানিকে ইনিয়েস্তার উৎসর্গ:


২০১০ বিশ্বকাপ জয়ের পর এভাবেই নিজ জার্সি খুলে ড্যানি জার্ককে বিশ্বকাপ উৎসর্গ করেন। তার পোশাকে তখন লেখা ছিল, ‘ড্যানি জার্ক: সবসময়ই আমাদের সাথে’। আগের বছরই স্পেনের গোলরক্ষক ড্যানি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে অকালে মৃত্যুবরণ করেন। পরের বছর স্পেন জয় করে নেয় বিশ্বকাপ।

 


শেয়ার করুন

Author:

A dedicated government professional with a passion for photography, book reading, and traveling. Holding a Bachelor of Social Science (BSS), I am also a professional graphics designer with extensive experience in the field. When I'm not working, I enjoy blogging to share my thoughts and experiences with a wider audience.