শকুন ( ইংরেজি: Vulture) এক প্রকার পাখি। এটি মৃত প্রাণীর মাংস খেয়ে থাকে। সাধারণত এরা অসুস্থ ও মৃতপ্রায় প্রাণীর চারিদিকে উড়তে থাকে এবং প্রাণীটির মরার জন্য অপেক্ষা করে। পাখিগুলো তীক্ষ্ম দৃষ্টির অধিকারী শিকারি পাখিবিশেষ।
শকুনের গলা, ঘাড় ও মাথায় কোনো পালক থাকে না। প্রশস্ত ডানায় ভর করে আকাশে ওড়ে।লোকচক্ষুর আড়ালে মহীরুহ বলে পরিচিত বট, পাকুড়, অশ্বত্থ, ডুমুর প্রভৃতি বিশালাকার গাছে সাধারণত শকুন বাসা বাঁধে। সাধারণত গুহায়, গাছের কোটরে বা পর্বতের চূড়ায় ১-৩টি সাদা বা ফ্যাকাসে ডিম পাড়ে।
সারা বিশ্বে প্রায় ১৮ প্রজাতির শকুন দেখা যায়, এর মধ্যে পশ্চিম গোলার্ধে ৭ প্রজাতির এবং পূর্ব গোলার্ধে (ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়া) ঈগলের সাথে সম্পর্কিত ১১ প্রজাতির শকুন দেখা যায়। দক্ষিণ এশিয়ার দেশ বাংলাদেশে প্রায় ৬ প্রজাতির শকুন রয়েছে, এর মধ্যে ৪ প্রজাতি স্থায়ী আর ২ প্রজাতি পরিযায়ী। শকুন বা বাংলা শকুন ছাড়াও এতে আছে রাজ শকুন, গ্রীফন শকুন বা ইউরেশীয় শকুন হিমালয়ী শকুন, সরুঠোঁট শকুন, কালা শকুন ও ধলা শকুন। তবে শুধু গ্রীফন প্রজাতির শকুনই মাঝে মাঝে দেখা যায় (পরিপ্রেক্ষিত ২০১০)। এসব প্রজাতির শকুনই সারা বিশ্বে বিপদাপন্ন। স্থায়ী প্রজাতির মধ্যে রাজশকুন মহাবিপন্ন ।এটি ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানোর জন্যে ঠোঁটে পাথরের টুকরো বহন করে ও ডিমের উপর নিক্ষেপ করে।
বাংলাদেশে এখন মাত্র কয়েকশ বাংলা শকুন অবশিষ্ট আছে। সেজন্য এ পাখিটি বিশ্বের ‘মহাবিপন্ন প্রাণি’র তালিকায় রয়েছে। আমাদের দেশে একে এখনো বিপদগ্রস্তের তালিকায় রাখা হয়নি। তবে বন্যপ্রাণী আইনে এটি সংরক্ষিত।
মৃতপ্রাণী খায় বলে একে মাংসাশি পাখি বলে। এর দেহ বিশাল। ডানা প্রশস্ত। দেহের রঙ কালচে। মাথা ও ঘাড় পালকহীন। কান লতিকাহীন। ঠোঁট সরু ও লম্বা। লেজের পালক সংখ্যা ১২-১৪টি। এর দৈর্ঘ্য ৯০ সেমি, ওজন ৪.৩ কেজি, ডানা ৫৫ সেমি, ঠোঁট ৭.৬ সেমি, পা ১১.৬ সেমি ও লেজ ২২.৫ সেমি। এদের খাবারের তালিকায় রয়েছে মৃতপ্রাণী ও পচামাংস। সেপ্টেম্বর-মার্চ মাসে এরা ডিম পাড়ে মাত্র একটি করে। ডিমের মাপ ৮.৬ গুণ ৬.৪ সেমি। ৪৫ দিনের মাথায় এদের ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। উঁচু গাছ বা দালানে ডালপালা দিয়ে মাচার মতো করে বাসা বানায় এরা। আর এক বাসাতেই থাকে বছরের পর বছর।
মৃতপ্রাণী খায় বলে একে মাংসাশি পাখি বলে। এর দেহ বিশাল। ডানা প্রশস্ত। দেহের রঙ কালচে। মাথা ও ঘাড় পালকহীন। কান লতিকাহীন। ঠোঁট সরু ও লম্বা। লেজের পালক সংখ্যা ১২-১৪টি। এর দৈর্ঘ্য ৯০ সেমি, ওজন ৪.৩ কেজি, ডানা ৫৫ সেমি, ঠোঁট ৭.৬ সেমি, পা ১১.৬ সেমি ও লেজ ২২.৫ সেমি। এদের খাবারের তালিকায় রয়েছে মৃতপ্রাণী ও পচামাংস। সেপ্টেম্বর-মার্চ মাসে এরা ডিম পাড়ে মাত্র একটি করে। ডিমের মাপ ৮.৬ গুণ ৬.৪ সেমি। ৪৫ দিনের মাথায় এদের ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। উঁচু গাছ বা দালানে ডালপালা দিয়ে মাচার মতো করে বাসা বানায় এরা। আর এক বাসাতেই থাকে বছরের পর বছর।
বাংলাদেশে মোট ৬ প্রজাতির দেখা পাওয়া যেত। শকুন, রাজ শকুন, সাদা গিদরী বা গিন্নী শকুন, লম্বা ঠোঁট শকুৃন আমাদের দেশীয় প্রজাতি। আর ভ্রমণকারী হিসেবে কালো শকুন আর গ্রিফন শকুন ছিল। রাজ শকুন শেষবারের মত দেখা গেছে ৮০’র দশকে। এখনও হয়ত কোথাও টিকে রয়েছে। তবে লোকচক্ষুর অন্তরালে। লম্বা ঠোঁট শকুন ১৯৯২ সালে ভৈরবে পক্ষিবিদ পল থমসন শেষবারের মতন দেখেন। গিন্নী শকুনের শেষ দেখাও ১৯৮৪ সালে পল থমসনের চোখে। কালো শকুন ১৯৮৭ সালের নভেম্বরে ধরা পড়ে চাঁদপুরে। পরে এটিকে কুমিল্লা চিড়িয়াখানায় রাখা হয়। গ্রিফন শকুন ১৮ নভেম্বর ১৯৯২ সালে শেষবারের মত দেখা যায় ভৈরবে।
বাংলা শকুন টিকে রয়েছে কোন রকমে। অথচ সত্তর দশকে রাজ শকুন আর বাংলা শকুনে ছেয়ে ছিল ঢাকা। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহ চিত্রগুলোতে দেখা যায় দল বেধে মৃতদেহের উপর বসে আছে তারা। সত্তরের দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির বুদ্ধ নারিকেল গাছের সারিতে আর পলাশী ব্যারাকের কাছের উঁচু গাছগুলোতে দেখা যেত বাংলা শকুনের। এখন বাংলা শকুন ছাড়া আর কোন শকুন কারো চোখে পড়ে না। গোটা বাংলাদেশ জুড়ে মোট শকুনের সংখ্যা ২০০০টিও নয়’ বলে জানিয়েছেন বন অধিদপ্তর।
বাংলা শকুনের সবচেয়ে বড় দলটি এখন রয়েছে শ্রীমঙ্গলের কালাছড়া এলাকায়। সেখানে একসাথে প্রায় ৪৭টি শকুন বাস করে। গত বছর বাংলাদেশ বার্ডস ক্লাবের সভাপতি ইনাম আল হকের ক্যামেরায় ধরা পড়ে এই শকুনের দলটি। হবিগঞ্জের রেমা কালেঙ্গায় রয়েছে ২০টি শকুন। সুন্দরবনের দিকে বেশ বড় কয়েকটি দল রয়েছে।
তথ্য ও ছবিঃ সংগ্রহ
শেয়ার করুন
0 coment rios:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন